সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরসাদুর রউফ এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ডিবি কার্যালয়ে আগুন লাগার ঘটনায় মামলার কিছু নথি নষ্ট হয়ে গেছে। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, মামলার তদন্ত এখনো চলমান এবং এটি শেষ করতে আরও সময় প্রয়োজন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ৯ মাস সময় চাওয়া হলেও আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।
এর আগে, ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট র্যাবকে তদন্ত থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে উচ্চ পর্যায়ের একটি টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন। এরপর চার সদস্যের ওই টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যার আহ্বায়ক করা হয় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধানকে। এতে আরও রয়েছেন পুলিশ সদর দফতর, সিআইডি ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে আদালতের অবকাশকালীন ছুটির কারণে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত এ বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি শুরুতে শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা তদন্ত করেন। এরপর দায়িত্ব দেওয়া হয় ডিবিকে। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব)। কিন্তু এত বছর পরও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
মামলার বাদী পক্ষের পক্ষে ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ২০১২ সালে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন জনস্বার্থে রিট করলে হাইকোর্ট সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না— এই মর্মে রুল জারি করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম